Metcalfe Hall-I Am Kolkata Museum-Kolkata Heritage Archive

Metcalfe Hall-I Am Kolkata Museum-Kolkata Heritage Archive

Metcalfe Hall-I Am Kolkata Museum-Kolkata Heritage Archive

বিবাদীবাগে অবস্থিত এই মেটক্যাফে হল বর্তমানে 'I am Kolkata Museum'. এই হেরিটেজ বিল্ডিংয়ে একই ছাদের তলায় কলকাতার বিভিন্ন আবেগ, ভালো লাগার মুহূর্ত, ব্যাক্তিত্ব, ছবি,সিনেমা সব মিলিয়ে মিশিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।এক ঝলকে যেন এক মুঠো কলকাতা।

Enjoy full video of Metcalfe Hall tour below:



১৯৯২সালে মেট ক্যাফে হলকে সংরক্ষিত স্মারক ঘোষণা  করার হয়।২০১৯ সালের ৮ ই মার্চ থেকে জনসাধারনের জন্য নতুন রূপে উন্মোচন করা হয়।ভারতের গভর্নর জেনারেল চার্লস টি.মেট ক্যাফের স্মৃতির উদ্দেশ্যে বানানো হয় এই সৌধ।এথেন্সের টেম্পল অফ দি উইন্ডের সম্মুখের স্তম্ভের আদলেই তৈরি হয় এই হলটি। যার স্থপতি ছিলেন সি.কে.রবিনসন।হলটি চারিদিকে স্তম্ভ দিয়ে ঘেরা,এই সুউচ্চ হলটি ভারসাম্যের কথা মাথায় রেখে মোট ৩০টি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয় সমদূরত্ব বজায় রেখে চারিদিকে, যার উচ্চতা ৩৬ ফুট।


 
কলকাতার প্রথম লাইব্রেরী ছিল এটিই।১৯০৩ সালে এই লাইব্রেরীটি ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরী হয়।পরে ১৯২৩ সালে এখান থেকে লাইব্রেরী স্থানান্তরিত করা হয় আলিপুর বেলভেডিয়ায়,যা বর্তমানে ন্যাশনাল লাইব্রেরী বলে পরিচিত।




দোতলা এই হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের নিচের তলায় আছে মোট পাঁচটি ঘর।মূল প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকেই প্রথম ঘরে আছে আর্ট গ্যালারি,যেখানে দেয়াল জুড়ে রয়েছে সাদা কালো, রঙিন নানা ছবি,কোনটি বা হাতে আঁকা।কলকাতার বিভিন্ন দশকের নায়ক,নায়িকা,পরিচালক বা বিভিন্ন সিনেমার জনপ্রিয় দৃশ্য দিয়ে সাজানো ঘরটি, চোখের সামনে ভেসে উঠবে বিভিন্ন সিনেমার টুকরো টুকরো দৃশ্য।মেঝেতে অপূর্ব আলপনা যা আমাদের ঐতিহ্যকে স্মরণ করায়,  যেনো অভিবাদন জানানো হচ্ছে অতিথিদের এক ঘর থেকে আর এক ঘরে।আর্ট গ্যালারির পাশের বাঁদিকের  বিশাল ঘরটিতে রাখা আছে একটি সুসজ্জিত টানা রিক্সা,যা কলকাতার সংস্কৃতির ধারক ও বাহক,উত্তর ও মধ্য কলকাতার অলিতে গলিতে আজও চলে ঠুণ্ঠান আওয়াজ করে।ঘরের মেঝে জুড়ে আছে কলকাতার প্রতি মানুষের ভালোবাসার অঙ্গীকার,মেঝে প্রায় ঢেকে যেতে চলেছে গোলগোল ছোটো কাগজের ভালোবাসার আলপনায়।উল্টোদিকের দুটি ঘরে আছে পুরোনো কলকাতার কিছু সাদা কালো ছবি,মেট ক্যাফে হল এর পুরোনো ছবি ও নতুন ভাবে গড়ে ওঠার কিছু ছবি।আলপনা বরাবর হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যাব শ্যাডো জোনে।আছে হ্যান্ড শ্যাডোগ্রাফি,যেখানে আমাদের প্রাণের কলকাতাকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।আছে I Am Kolkata Zone। আছে আলোর আলপনা।এই গ্যালারিকে বলা হয় 'সিটি  অফ সারপ্রাইজ'।




কাঠের সিঁড়ি এঁকে বেকে উঠেছে দোতলায়, আর দুধারে আছে বিভিন্ন সিনেমার পোস্টার,যেগুলো আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে সেই পুরোনো দিনে।কলকাতার বিভিন্ন  সিনেমার সুখস্মৃতি মনে করতে করতেই পৌঁছে যাবো দোতলার প্রথম ঘরটিতে।'সিটি   অফ মেমোরিজ' পেরিয়ে এবার 'সিটি অফ স্টোরিজ' দেখার পালা।আছে একটি বৃহৎ কাঠের নৌকা যার পাটাতনে আছে ভিসুয়াল ডিসপ্লে, টাচ স্ক্রীন দ্বারা আমরা জেনে নিতে পারি
কলকাতার নানান গুল্প। পরের ঘরটিকে হল 'সিটি অফ ইনফ্লুয়েন্স' সহজ কথায় আমাদের কলকাতাকে সারা বিশ্বের কাছে গৌরবান্বিত করেছেন যে সব ব্যাক্তিত্ব তাদের ছবি সহ স্বল্প বিবরণ। আছেন রবীন্দ্রনাথ,জগদীশচন্দ্র বসু সহ আরো অনেক মনীষী।




পাশের ঘরে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কলকাতার বিভিন্ন আবেগ। ইঁটের দেয়ালে রয়েছে বারিন মুখোপাধ্যায়, আসগর আলী, পিটার সন এর লেটার বক্স,যা কলকাতার বুকে ঠাঁই পাওয়া বিভিন্ন সম্প্রদায়ের  মিলে মিশে বাস করার চিত্র অনায়াসেই আমাদের সামনে তুলে ধরে। কলকাতার বিভিন্ন স্থান,বাঙালির আবেগ,মিষ্টি থেকে মাছ, কফি হাউস থেকে বই পাড়া,সবই নিপুণ হাতে যেনো ফুটিয়ে তোলা।আছে মাটির দুর্গা প্রতিমা, ঢাক ও ঢাকের বাদ্যি দিয়ে কলকাতার পুজোকে ফুটিয়ে তোলার ভিডিও।পুজোর সাথে যুক্ত নানা আবেগ,বাঙ্গালী বিবাহের উপযোগী সোলার তৈরি নানা উপাদান,আছে সুবৃহৎ,আকাশচুম্বী একটি টোপর,যেটা দেখে আপনাদের টোপর পরিহিত বিশেষ দিনের সেই বিশেষ মুহূর্তের কথা মনে হতে বাধ্য আর যারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন নি,তারাও এর প্রেমে পড়তেই পারেন।আছে লম্বা হলে বহু পুরনো ছবি,গ্রামোফোন, অনেক পুরোনো রেকর্ড প্লেয়ার,টাইপ রাইটার,পুরোনো বায়োস্কোপ মেশিন আরও অগুনতি জিনিস।এক ছাদের তলায় হাঁটতে হাঁটতে যেনো পৌঁছে যাচ্ছিলাম কলকাতার   এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায়।এক নজরে যদি আমাদের প্রাণের শহর কলকাতাতে  নিজেকে ভাসিয়ে দিতে চান তাহলে অবশ্যই আস্তে পারেন এই হেরিটেজ বিল্ডিংয়ে।






পথ নির্দেশ:মিলেনিয়াম পার্কের ঠিক বিপরীত দিকে স্ট্যান্ড রোড ও হেয়ার স্ট্রিটের ক্রসিংয়ে অবস্থিত।ডালহৌসি GPO থেকে ৫ মিনিট হাঁটা পথ।চক্ররেলে এলে বিবাদীবাগ  স্টেশন মেট্রোতে স্প্ল্যানেডে নেমে হাওড়া গামী যেকোনো বাসে উঠে মিলিনিয়াম পার্ক স্টপেজে নামতে হবে।

Google Map:

খোলার সময়: সকল ১০ টা থেকে ৫ টাসোমবার বন্ধ

প্রবেশ মূল্য: মাথাপিছু ২০ টাকাহলের ঢোকার মুখেই পাবেন টিকিট কাটার লিংক।সেই লিঙ্ক থেকে কেটে নিতে হবে টিকিট।বলা বাহুল্য নেট কানেকশন ও আইডি নম্বরটি আবশ্যিক।

কাছাকাছি আর কি কি দেখে নিতে পারেন: ঠিক উল্টোদিকেই মিলেনিয়াম পার্ক।আছে রিভার ক্রুস,যাতে করে গঙ্গা বক্ষে ঘুরে বেড়াতে পারেন।পায়ে হেঁটে বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী বিল্ডিং দেখে নিতে পারেন যার মধ্যে রিজার্ভ ব্যাংক,জিপিও অন্যতম।স্ট্যান্ড রোড বরাবর বা মিলিনিয়াম পার্ক থেকে গঙ্গা বরাবর  হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যেতে পারেন প্রিন্সেপ ঘাট।

মন্তব্যসমূহ

Popular Posts

10 Famous Rath Yatra in West Bengal-পশ্চিমবঙ্গের ১০টি বিখ্যাত রথযাত্রা

চকদীঘি বাগানবাটি | Chakdighi Baganbati | Chakdighi Rajbari | Day Tour | Shooting Locations

Gobardanga Jamidar Bari-Prasannamoyee Kali Mandir-Gobardanga Kalibari

Rani Rashmoni Ghat Halisahar | Fuchka Gram | Dayouting Near Ganges | Weekend Tours Near Kolkata