Bengali Numeral Wall Clock-Bhim Chandra Nag
Bengali Numeral Wall Clock-Bhim Chandra Nag
আজ পয়লা বৈশাখ।১৪২৭ পেরিয়ে ১৪২৮এ পা দিল বাংলা নববর্ষ। আর বর্ষবরণের এমন দিনে মিষ্টি ছাড়া কি ভাবা যায়! আর এই মিষ্টির সম্ভারে মনে পড়ে উত্তর কলকাতার যে দোকানের নামগুলো তার মধ্যে ভীম নাগ অন্যতম।ভীম নাগকে রাতারাতি বিখ্যাত করার পিছনে অবদান যে লেডিকেনি,তার জন্ম বৃত্তান্ত তো আগেই বলেছি।রইলো তাও আর একবার।
Related Posts : Ledikeni History, Railway Mutton Curry
ভীম চন্দ্র নাগের বউ বাজারের দোকান মানেই বাঙালি জাতির মিষ্টির প্রতি ভালোবাসার এক জীবন্ত নিদর্শন। আর দোকানে গেলেই চোখে পড়বে সেই ঐতিহাসিক বাংলা হরফের ঘড়ি। লেডিকেনির সাথে এই ঘড়িও ভীম নাগকে ইতিহাসের পাতায় অমর করেছে।সময় সিপাহী বিদ্রোহের পর পর, লেডিকেনি বানিয়ে তখন দেশীয় লোক ও ইংরেজদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় এই হালুইকর ও তার দোকান।সেই স্বাদের ভাগ নিতেই দোকানে হাজির হলেন একদিন 'কুক অ্যান্ড কেলভি' কোম্পানির বড় সাহেব।মিষ্টি খেয়ে তো সাহেব বেজায় খুশি।ততটাই অবাক হন যে দোকানে কোনো ঘড়ি নেই দেখে।মিষ্টির উপহারস্বরূপ তিনি বলেন যে,দোকানে তিনিই একটি ঘড়ি উপহার দেবেন। আর বড়সাহেব এও বলেন কালই যেনো ভীম নাগ কাউকে পাঠিয়ে দেন, বড়সাহেব তার হাতে ঘড়ি পাঠিয়ে দেবেন। ভীম নাগ খুশি হয়ে বলেছিলেন সে তো বেশ কথা।কিন্তু বাবু,আমার দোকানের কর্মচারীরা ইংরেজি পড়তে পারে না।তোমাদের সায়েবি কোম্পানিতো বাংলায় এক দুই লেখা ঘড়ি বানায় না।তাই ঘড়িতে কাজ নেই।।সাহেব সেদিন ফিরে এসেছিলেন।কিন্তু যেমন কথা তেমন কাজ।উপহার তো দিতেই হবে এবং সেটা হওয়া চাই মনের মতো।ভীম নাগের মিষ্টির এমনই মাহাত্ম্য যে,রাতারাতি খাস লন্ডন শহর থেকে বাংলা হরফে ডায়াল তৈরি হয়ে এসেছিল।সে ঘড়ি আজও বউবাজার দোকানে দিব্যি সময় দিচ্ছে।যার অক্ষর গুলি বাংলা ও মাঝে কোম্পানির কুক ও কেলভি নামটাও বাংলায়,তার নিচে লন্ডন টাও বাংলায় জ্বলজ্বল করছে।পুরোনো কলকাতার অনেক কিছুই বদলাচ্ছে তবুও বদলাচ্ছে না এমন অনেক কিছুই যা,আজও আছে,শুধু খোঁজার অপেক্ষা হয়তো।
১৮২৬ সালের আশেপাশে হুগলি জেলার জনাই নামক গ্রাম থেকে কলকাতায় এসে বউ বাজারে ছোট্ট দোকান খুললেন ময়রা প্রাণ চন্দ্র নাগ।তার মৃত্যুর পর যোগ্য উত্তরসূরী ভীম চন্দ্র নাগ নিলেন দায়িত্ব ও দোকানকে পৌঁছে দিলেন যে উচ্চতায় সেখান থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি পরের প্রজন্ম দের।আজ কলকাতার বুকে রয়েছে অনেক আউটলেট। কড়া পাকের সন্দেশএ ভীম নাগের দোকান আজ বিশ্ব জোড়া খ্যাতি অর্জন করেছে।শুধু তাই কি,কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব - মনোহরা,দিলখুস,ছানার-গজা,আম-সন্দেশ,বোদে,ছানার পোলাও,আমদই,আবার খাবো এককথায় অনবদ্য।এই মিষ্টির প্রেমে পড়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাণী রাসমণি,রামকৃষ্ণ দেব,রাজা রাম মোহন রায় থেকে হালফিলের কলকাতায় কাজে আসা বহু তারকা সহ ক্রিকেটাররা।তাদের কথায় এই দোকানের মিষ্টি ছাড়া নাকি কলকাতা ভ্রমণ অসম্পূর্ণ।কলকাতা তাদের কাছে হলেও আমার কাছে বউবাজার এই মিষ্টিগুলো ছাড়া অসম্পূর্ণ।
Apurbo...
উত্তরমুছুন