Kalna Rajbari-Ambika Kalna Tour-Weekend Destination-কালনা রাজবাড়ি

কালনা রাজবাড়ি কমপ্লেক্স-Kalna Rajbari-Ambika Kalna Tour-Weekend Destination
কালনা রাজবাড়ি কমপ্লেক্স-Kalna Rajbari-Ambika Kalna Tour-Weekend Destination

বড়দিনের ছুটিতে শীতের সকালে বেরিয়ে পড়েছিলাম মন্দির নগরী কালনার উদ্দ্যেশ্যে।পূর্ব বর্ধমানের ভাগীরথী নদী তীরে অবস্থিত বাংলার মন্দির নগরী কালনা। মঙ্গলকাব্যে এর উল্লেখ পাওয়া যায় অম্বামুলুক নামে।পরে সেখান থেকে হয় অম্বিকা নগর।মতান্তরে অম্বিকা কালনার নামকরণ হয় অম্বিকা সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের থেকেই।কালনার ১০৮ শিব মন্দিরের গঠন শৈলী অপূর্ব ও এক কথায় অভিনব।১০৮ শিব মন্দির নিয়ে আগে বিস্তারিত পোষ্ট করেছি।

Watch Full Video Here :

১০৮ শিব মন্দিরের ঠিক বিপরীতেই অবস্থিত রাজবাড়ি কমপ্লেক্স।তোরণ দিয়ে ঢোকার পরই বিস্তৃত সুসজ্জিত বাগান। আর মাঝে বাগানকে ঘিরে চারিদিকে রয়েছে মন্দিরের সমারোহ,যার মধ্যে চার চালা,আটচালা,দেউল,রেখ, পঁচিশ রত্ন,জোরবাংলা, চাঁদনী বাংলার সব গঠনশৈলীর মন্দিরই চোখে পড়বে।

মূল ফটক দিয়ে ঢুকেই বা দিকে রেখা দেউল গঠন শৈলীর প্রতাপেশ্বরের মন্দির।১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজকুমার প্রতাপচন্দ্রের স্ত্রী প্যায়ারি কুমারী দেবী এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন।গর্ভগৃহে শিবলিঙ্গ।প্রতিটি মন্দিরেই টেরাকোটার কাজ নজর কাড়ার মতোই।কয়েক পা এগোলেই পাশেই ছাদবিহীন রাসমঞ্চ।ষোড়শ শতকে চৈতন্য মহাপ্রভু কালনা আসলে তখন থেকেই কালনার বৈষ্ণব ধর্মের প্লাবন বয়ে যায়।সেই মন্দিরটিও কালনায় আজও বর্তমান।রাস মঞ্চটিতে রাতে আলো জ্বললে আরও অপরূপ লাগে।এই রাজবাড়ি চত্তরের সব থেকে সুন্দর ও প্রাচীন মন্দির হলো লালজী মন্দির।বর্ধমানের মহারাজ কীর্তি চাঁদের মা ব্রজকিশোরী দেবী এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন ১৭৪৯ খ্রিষ্টাব্দে।পঁচিশরত্নের এই মন্দিরের গর্ভগৃহে রাধা কৃষ্ণের যুগলমূর্তি,সামনে চার চলার নাটমন্দির।সেই থেকে আজও নিত্য পুজো হয়ে চলছে,বৈভব কমেছে নিঃসন্দেহে।সারা বাংলায় যে ৬ টি ২৫ চূড়া মন্দির আছে তার মধ্যে এটিকে অনেক পুরাতত্ববিদ বাংলার শ্রেষ্ঠ মন্দির দাবী করেন।

এই মন্দিরগুলো ছাড়াও আছে পঞ্চরত্ন মন্দির,আছে রূপেশ্বর শিবমন্দির।মন্দির ছাড়াও চোখ জুড়াবে বাগান ভর্তি ফুলের শোভা।শীতকাল হওয়ার সুবাদে রাজবাড়ি কমপ্লেক্সের বাগানের শোভা যেনো আরও পরিপূর্ণতা লাভ করেছিল।

বাগানের এক পাশে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে নিজেকে খানিকটা স্বতন্ত্র রাখার চেষ্টায় ২৫ ফুট উঁচু প্রতাপ চন্দ্রজী মন্দিরটি।গাছ দিয়ে ঘেরা,টিয়া পাখির ডাকে মুখরিত পরিবেশ।মন্দিরটিকে লালজী মন্দিরের ক্ষুদ্র সংস্করণ বলা চলে।১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে ত্রিলোকচাঁদের মাতা লক্ষ্মী কুমারী দেবী এই মন্দিরটি নির্মাণ করান।তিনতলা চূড়া বিশিষ্ট মন্দির, এখানেও গর্ভগৃহে রাধা কৃষ্ণের মূর্তি।মন্দিরের গা জুড়ে নানান টেরাকোটার কাজের মাধ্যমে রামায়ণের নানান দৃশ্য বর্ণনা করা।মন্দিরটিকে পরিক্রমা করে পিছনে গেলে চোখে পড়বে বিজয় বৈদ্যনাথ মন্দির।

আমরা বেশিরভাগ মানুষই টেরাকোটার কাজ বলতে বুঝি বিষ্ণুপুরের কথা।তবে পরপর বর্ধমানের বেশ কিছু জায়গা ঘুরে আমার সে ধারণা একেবারেই বদলে গেছে। আমাদপুর হোক বা অম্বিকা কালনা এখানের টেরাকোটার কাজ এককথায় অনবদ্য।শুধু তাই নয় মন্দির গুলো বাংলার প্রাচীন গৌরবের,হাজারো উত্থান পতনের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।

You Can Read : Kalna 108 Shiv Mandir , Gobardanga Kali Mandir

মন্তব্যসমূহ

Popular Posts

Top 10 Rajbari near Kolkata-Zamindar Houses in Bengal-Heritage Home Stay-Dayout Plan-Weekend Tour

Chatu Babu Latu Babur Bari - Bonedi Barir Durga Puja

Bonedi Barir Durga Puja Parikrama-Hooghly Bonedi Barir Puja-Gramer Pujo-Jamidar Barir Pujo

Gobardanga Jamidar Bari-Prasannamoyee Kali Mandir-Gobardanga Kalibari