Roy Villa-RKM Darjeeling-Bhagini Nivedita House-Darjeeling Sightseeing
চেনা দার্জিলিঙের অজানা ইতিহাস
আজ বলবো শৈলশহর দার্জিলিঙের সেই চারতলা বাড়িটার কথা,রায় ভিলার কথা।ইউরোপিয়ান ক্যাসেলের আদলে তৈরি দার্জিলিঙের পাহাড়ের কোলে লেবং রোডের এই চারতলা বাড়িটির সাথে জড়িয়ে আছে অনেক স্বনামধন্য ব্যাক্তিত্ব,তাদের জীবনের গুল্প।যার মধ্যে অন্যতম ভগিনী নিবেদিতা।পাহাড়ের লোকেরা রায় ভিলা বলতেই নিবেদিতার বাড়ি বোঝে। সত্যিই সিস্টার নিবেদিতার স্মৃতি বিজড়িত রায় ভিলা,যেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন ১৯১১সালের ১৩ ই অক্টোবর ৪৩ বছর বয়সে।
বাড়িটির বয়স প্রায় ১১৫ বছর হবে।এই বাড়িটির মালিক ছিলেন দ্বারকানাথ রায়,যিনি সম্পর্কে প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রিন্সিপাল পি.কে.রায়ের দাদা।পরবর্তী সময়ে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু তার বন্ধু দ্বারকানাথ রায়ের থেকে এই বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন,গ্রীষ্মকালীন আবাসন হিসাবে।তিনি ও তার স্ত্রী অবলা বসু নিজের হাতে সাজিয়েছিলেন বাড়িটিকে।সিস্টার নিবেদিতার শরীর ক্রমশ খারাপ হতে থাকলে বিজ্ঞানী ও তাঁর পত্নী নিবেদিতাকে দার্জিলিঙের এই রায় ভিলায় এসে থাকার আমন্ত্রণ জানান,পাহাড়ের পরিবেশে তার শরীরের উন্নতি হবে নিশ্চিত সেই আশায়।ভগিনী নিবেদিতা সেই আমন্ত্রণ অস্বীকার করতে না পেরে আসেন ও এই বাড়িটির পরিবেশ ও মাধুর্যে এক প্রকার প্রেমে পড়ে যান। বারে বারে এখানে থাকতে আরম্ভ করলেন।১৯০৩ থেকে ১৯১১ এই কয় বছরে তিনি ৭ বার দার্জিলিঙে এসেছেন এই বাড়ির টানে।শেষে ১৯১১ সালে শুধু এই বাড়ির মায়া নয়, ইহলোকের মায়া কাটিয়ে তাঁকে বিদায় নিতে হয়েছিল এই বাড়ি থেকেই।মৃত্যুর সময় রায় ভিলায় সস্ত্রীক জগদীশ বোস ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডাক্তার নীলরতন সরকার মহাশয়।
মাঝে বেশ কিছু বছর বাড়িটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় থাকে।শুরুর মুহূর্তে Himalayan Mountaineering Institute এখন যেখানে সেখানে ছিল না,১৯৫৭ সালের আগে কিছু বছর সেটা ছিল রায় ভিলাতেই।নতুন ভাবে তৈরি হয়ে সেটা যখন স্থানান্তরিত হলো সেখানে তখন হল গোর্খাল্যান্ডের টেরিটোরিয়াল এডমিস্ট্রেশন দপ্তর, ছিল বেশ কিছু বছর।তারপর রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করে।বর্তমানেরাজ্য সরকারের উদ্যোগে এখানে চালু হয় " রামকৃষ্ণ মিশন নিবেদিতা এডুকেশনাল এন্ড কালচারাল সেন্টার" (RKM)।
দার্জিলিংএ সাইটসিন করতে বেরোনো বেশিরভাগ মানুষই সারাদিনে কত কিছু দেখেন,নতুনত্বের খোঁজে ছুটে বেড়ান এদিক সেদিক, হয়তো এর আশপাশ দিয়েই যাওয়া আসা করেন কিন্তু এই বাড়ি অচেনা অজানাই থেকে যায়। আমিও তাদের মতোই একজন তবে নতুনের সাথে আমার চলার পথে আমি এই বাড়িগুলোকেও অস্বীকার করে এগোতে পারি না যে! রইলো আমার এবারের দার্জিলিং সফরের থেকে সংগ্রহ করা রায় ভিলার কিছু ছবি |
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
If you have any query, please let me know.