Longleat Safari Park-Gurukul in UK
Longleat Safari Park-Longleat House-Mohabbatein Shooting Place
২০০০ সালের বিখ্যাত হিন্দি ছবি মহব্বতের গুরুকুল বলে দেখানো হয়েছিল যে বাড়িটি সেটি আসলে ইংল্যান্ডের লংলিট হাউস।যে বাড়িটি সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে এক সাধারণ মানুষের অদম্য ইচ্ছায় রাজা হয়ে ওঠার ইতিহাস নিয়ে, প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের অভিজ্ঞতা নিয়ে।৯০ এর দশকের সাড়া জাগানো তরুণ তরুণীদের মধ্যে প্রথম ভ্যালেন্টাইন ডে কে বিখ্যাত করানোর সিনেমা মহব্বতে।সিনেমাটি বহুবার দেখেছি আমরা অনেকেই।আর যতবারই দেখেছি অবাক হয়েছি,জানতেও ইচ্ছা হয়েছিল যে কোথায় এই বাড়িটা।অনেকেই ভেবেছি সেট হয়ত।কিন্তু দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে যে এই বাড়িটির অবস্থান তা সেদিন বুঝলাম যেদিন ইংল্যান্ডের লংলিট সাফারি পার্কের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করতেই দূর থেকে চোখে পড়েছিল এই বাড়ি আর মুখ থেকে খুব স্বাভাবিক ভাবেই বেরিয়েছিল গুরুকুল!!
ব্রিটেনের এলিজাবেথীয় স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন এই বাড়িটি নির্মাণ করা হয় ১৫৬৮ থেকে ১৫৮০ সালের পরিসরে, স্যার জন থিনের উদ্যোগে।তার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল Elizabeth-I কে খুশী করা।বাড়ির মূল নকশা করেছিলেন রবার্ট স্মিথ সন সহ তিনি নিজেও।
Related Posts : Tower Bridge History, HMV Logo History
১৫৪০ সালে ৫৩ পাউন্ড দিয়ে তিনি বাড়িসহ ৬০ একর জমি কিনেছিলেন। একই জায়গায় আগের বাড়িটি ১৫৬৭ সালে আগুনে পুড়ে যাবার পর আবার ১২ বছর ধরে চলে বর্তমান বাড়িটির নির্মাণ কার্য।বাড়িটির স্থাপক জন থিন ছিলেন রাজপরিবারের করণিক।কিন্তু তিনি ছিলেন উচ্চাকাঙ্খী ও সৌখিন।নিজের বুদ্ধিবলে ও সঞ্চিত পুঁজির ভিত্তিতে তিনি এই বাড়ি তৈরি করেছিলেন সমাজে নিজের সম্মান মর্যাদা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য।। রাজ পরিবারের না হয়েও তার কৃতকর্মের মাধ্যমে তাক লাগবে রাজ পরিবার সহ সকল উচু বিত্তর,নিজেকে তাদের সমকক্ষ করে তোলা এই ছিল তার মনোবাঞ্ছা।তিনি আরও চেয়েছিলেন রাণী এলিজাবেথকে এই বাড়িতে সাদরে আপ্যায়ন করতে।তার সে মনোবাঞ্ছা পূর্ণও হয়েছিল।তার এই বাড়ির সৌন্দর্যের কথা ছড়িয়ে পড়তেই সেই সুদিন এলো তার কাছে যেদিন রাণী নিজেই আস্তে চাইলেন তার বাড়িতে ও থাকতে চাইলেন।কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে রাণীকে খুশী করার মতো অভ্যর্থনায় তিনি প্রস্তুত ছিলেন না।তাই বাড়ি কাজ অসম্পূর্ণ এই অজুহাতে সেবারের রানীর আগমন সাময়িক স্থগিত রাখেন তিনি।নিজেকে প্রস্তুত করে ১৪০ পাউন্ড দিয়ে রানীর জন্য কিনলেন অপূর্ব এক নেকলেস,যা দিয়ে করলেন রানীর অভিবাদন। একে তো লংলিট হাউস এর সৌন্দর্য্য সাথে অপ্রত্যাশিত অভ্যর্থনায় আপ্লুত রাণী।দীর্ঘদিনের প্রয়াস তার সফলতা পায়।মুগ্ধ রানীর উচ্ছাসিত প্রশংসাই থিন পরিবারের এই হাউসকে রাতারাতি বিখ্যাত করে তুলেছিল গোটা ব্রিটেনে।
বাড়িটিতে আছে ১২৮ টি ঘর,যার সাইজ সে যুগীও ব্রিটিশ হাউসের প্রায় ৪০গুন,আছে রাজকীয় কায়দার সব আসবাব, ফায়ার প্লেস,ওক টেবিল,ওয়েল পেন্টিংস। আছে ৭টি লাইব্রেরী যেগুলিতে স্থান পেয়েছে ৪০,০০০ এরও বেশি অমূল্য বই।ইউরোপের বৃহত্তম প্রাইভেট লাইব্রেরি ও এটি।
স্যার জন থিন চিরস্মরণীয় হয়ে রইলেন তার কাজের মাধ্যমে।তার বংশধরদের জন্য রেখে গেলেন প্যালেস সহ রাজসিক সম্মান। ১৯ এর দশকে এই বাড়ির অভ্যন্তরীণ কাঠামোয় অনেক পরিবর্তন আনা হলেও বৃহদাকার হল ঘরটি অবিকল রাখা হয়।লোক শ্রুত স্যার জন থিন আসেন তার বাড়ি পরিদর্শনে আর তখন যাতে তিনি চিনতে পারেন তার নিজের পছন্দের সেই হল ঘরটি।
Google Map:
https://goo.gl/maps/dqFscUrvV6XPbH6X6
Address:
Longleat, The Estate Office, Warminster BA12 7NW, United Kingdom
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
If you have any query, please let me know.