ঝর্ণা কলমে সুলেখা কালি | Sulekha Ink | Best Indian Fountain Pen Ink | Gift Item | Best Printing Ink | Good Handwriting
স্বাধীনতার লড়াইয়ে টিকে থাকা সুলেখা আজও গৌরবময় ও নস্টালজিক
'সুলেখা', আক্ষরিক অর্থে সুন্দর হস্তাক্ষর বোঝালেও এই নামের সাথে বাঙালির চেতনা,আত্ম সম্মান,অনেক ইতিহাস,হারানো গৌরব,স্বদেশী আন্দোলন মিলেমিশে একাকার।তাই এই কালির প্রসঙ্গ উঠলে বাঙালি নস্টালজিক না হয়ে পারে না।তবে কজনই বা জানে সেই নস্টালজিয়ার কথা? বর্তমান প্রজন্ম জানে কি?যাদবপুরের সুলেখার মোড়ের নাম আমরা কমবেশি জানি কিন্তু কেনো এই মোড়ের নাম এমন হলো সেটাও তো দীর্ঘ ইতিহাস।
তখন স্বদেশী আন্দোলনের হাওয়া বইছিল সারা দেশ জুড়ে, বিদেশী দ্রব্য বর্জনের দাবীও উঠছে জায়গায় জায়গায়।সেই প্রেক্ষিতে চিঠিপত্র বা দরকারি কাজে বিদেশি ঝর্না কলমের ব্যাবহার সত্যিই লজ্জাজনক।উদ্যোগ নিতে এগিয়ে এলেন গান্ধীজি স্বয়ং।রাজশাহী থেকে ননীগোপাল মৈত্র ও শঙ্করাচার্য মৈত্র গান্ধীজির স্বদেশী শিল্প গড়ার ডাকে সাড়া দিলেন ভীষণভাবে।বিদেশি কালির সাথে টেক্কা দিতে পারে এমন কালি তৈরিতে ব্রতী হলে ভাতৃদ্বয়।আর এ কাজে সহায়তা করলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র।তিনি তাঁর সহকারী তথা বেঙ্গল কেমিক্যালসের চিফ কেমিস্ট ও মুক্তিযোদ্ধা সতীশ চন্দ্র সামন্তকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দিলেন।তিনিই ল্যাবে তৈরি তার 'কৃষ্ণধারা', কলমের কালি তৈরির ফর্মুলা তুলে দেন ননী গোপালের হাতে।শুরু হলো এক্সপেরিমেন্টের পর এক্সপেরিমেন্ট,আগের চেয়ে অনেক ভালো অনেক নিখুঁত,হতে হবে বিদেশি কালির সমতুল্য।
১৯৩৪ সালে অধুনা বাংলাদেশের রাজশাহীতে পথ চলা শুরু হয়েছিল 'সুলেখা ওয়ার্কস লিমিটেড' এর।
' স্বদেশী শিল্পই জাতির মেরুদণ্ড।স্বাধীন ভারতে বিদেশি কারখানা ক্ষতিকর ' এই স্লোগান দিয়ে শুরু হল সুলেখা কালির পথচলা।নারী পুরুষ নির্বিশেষে মৈত্র পরিবারের সকলেই লেগে পড়েছিলেন এই লড়াইয়ে,স্বদেশী শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে।স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ এই কালির বিজ্ঞাপনে লিখেছিলেন 'সুলেখা কালি'। এই কালি কলঙ্কের চেয়েও কালো।'গোড়ার দিকে 'প্রফেসর মৈত্রর কালি' হিসাবেই পরিচিত ছিল এই কালি।সুলেখা নাম প্রাপ্তি অনেক পরের কথা।
ঝর্না কলমের মতই হয়তো বা এই নামও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরই দেওয়া হয়ত বা গান্ধীজির।নাম সে যেই বা দিক তখন বেশিরভাগ মানুষেরই লেখার সঙ্গী ছিল এই সুলেখা নিঃসন্দেহে।বিধানচন্দ্র রায়ও ছিলেন এই কালির মডেল কখনো,ফেলুদাতে সত্যজিৎ রায় বহুবার উল্লেখ করেছেন এর কথা।বাংলাদেশ ছেড়ে কলকাতায় এসে ১৯৩৮ এ বৌবাজার বড় কারখানা আর ১৯৩৯ সালে কসবা ও ১৯৪৬ এ যাদবপুরে কোম্পানি স্থানান্তরিত হয়।সেটাই আজকের সুলেখা মোড়।ভালই তো ছিল কিন্তু আশির দশক থেকে বল পেনের দৌরাত্ম্য বাড়ায় পিছিয়ে পড়তে থাকে ক্রমশ।১৯৮৮ সালে এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায় সুলেখা।মানুষও ভুলতে বসে।
সাধারণত যে সব জিনিস একবার হারিয়ে যায়,তার বেশিরভাগই আর ফিরে আসে না।সেক্ষেত্রে সুলেখা এবারও ব্যতিক্রম। হাল ছাড়েনি সুলেখা ওয়ার্কস লিমিটেড।২০০৬ সালে প্রত্যাবর্তন করে এই সংস্থা।অনেকের মাঝে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা মুশকিল হলেও প্লাস্টিক বর্জন বা সখের জন্যই হোক, মানুষ এখন আবার ঝর্না কলমমুখী হচ্ছে। আসুক না নতুন, তা বলে কি পুরাতনকে ভুলে যেতে হবে? দুইয়ের মেলবন্ধনেও তো চলা সম্ভব।বল পেন যদি হয় নিত্য দিনের সাথী,ঝর্না কলম না হয় হোক বিশেষ দিনের।
আলাপ করে কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।
Sulkeha Shop Address:
C-80, Raja Subodh Chandra Mallick Rd, Ananda Pally, Ramkrishna Upanibesh, Jadavpur, Kolkata, West Bengal 700032
Sulekha Online Shopping:
1) https://sulekhaink.co.in
2) https://www.amazon.in/sulekha-fountain/s?k=sulekha+fountain+pen
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
If you have any query, please let me know.