Jalbhara Surjya Kumar Modak-Jamai Sasthi Special-Origin-History

Jalbhara Surjya Kumar Modak-Jamai Sasthi Special-Origin-History-Bengal Special Sweets

Jalbhara Surjya Kumar Modak-Jamai Sasthi Special-Origin-History-Bengal Special Sweets

মিষ্টি পছন্দ করে না এরকম বাঙ্গালীর জুড়ি মেলা ভার।দৈনন্দিন জীবন হোক বা উৎসব অনুষ্ঠান মিষ্টি কিন্তু চাই ই চাই। আর সেই মিষ্টি যদি হয়ে থাকে সূর্য মোদকের জল ভরা তাহলে তো কথাই নেই।এই জলভরা তাল শাস সন্দেশের উৎপত্তির সাথে জড়িয়ে আছে কিন্তু এক মজার ইতিহাস।সেটা শুনতে ফিরে যেতে হবে চন্দননগরে।সেযুগের ফ্রেঞ্চ কলোনিতে।চন্দননগর বলতেই প্রথমেই মনে আসে জগদ্ধাত্রী পুজো ও জলভরা সন্দেশের কথা।তাই অনেকেই মজা করে চন্দননগরকে 'জ' র শহরও বলে থাকেন।

শাশুড়িদের কাছে জামাই মাত্রই আদর যত্ন করার পাত্র,সে ঘোমটা ঢেকে বাতাস করা শাশুড়িই হোক বা আধুনিক শাশুড়িই হোক।জামাই এলে এমনি দিনেও চলে বিশেষ আয়োজন তবে জামাইষষ্ঠীর দিন সেই আয়োজন হয় বেহিসাবী। 


সেই সময়  বাংলায় জমিদারদের মধ্যেও সম্মান অনুযায়ী ভাগ করা ছিল বড়ঘর,ছোটো ঘর, পালটি ঘর।ভদ্রেশ্বরের ব্যানার্জীরা ছিলেন বড়ো জমিদার।পরিবারের বড়ো মেয়ের বিয়ে হয়েছিল বৈদ্যবাটির জমিদার ঘরে।সন ১২৯০ বঙ্গাব্দ, ভদ্রেশ্বরের তেলেনীপাড়ার ব্যানার্জী জমিদার গিন্নির সখ হয়েছিল নতুন জামাইকে তিনি নতুন কোনো মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করবেন।সেই সখ জমিদার মশায়ের কানে পৌঁছতেই এক্ষেত্রে হলো গিন্নির ইচ্ছায় কর্ম।জমিদার বাড়িতে ডাক পড়লো এলাকার প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন বিক্রেতা সূর্যকুমার মোদকের,তাকে হুকুম করা হলো এমন অভিনব মিষ্টি বানাতে হবে তাকে যাতে মিষ্টি দিয়ে হবে জামাই ঠকানো।সূর্যমোদক তো বেজায় চিন্তায় পড়লেন,কি হবে উপায়!জমিদারের আদেশ বলে কথা।অনেক ভেবে সূর্যমোদক তাল শাস আকৃতির একটি সন্দেশ তৈরি করলেন,যার ভিতরে ভরে দিলেন সুগন্ধী গোলাপ মেশানো দোলোর রস(সেকালে গুড়কে পাক দিয়ে যে চিনি তৈরি হতো তাকে দোলো বলা হতো)। আর সন্দেশের আকারও ছিল তেমন বড়ো,হাতের তালুর সমান প্রায়।নতুন মিষ্টি তৈরি হয়ে বিশেষ দিনে পাঠানো হলো জমিদারবাড়ির অন্দরে।জামাইয়ের সামনে পঞ্চব্যাঞ্জনের শেষ পাতে রাখা হলো সেই মিষ্টি।নব জামাতা যেই না কামড় দিলেন অমনি সন্দেশের ভিতরের রস ছিটকে তার গরদের পাঞ্জাবী দিল ভিজিয়ে।ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল জামাই,তবে সন্দেশের স্বাদ মন ভরিয়ে দিল।জমিদার গিন্নি বেজায় খুশি এমনটাই তো তিনি চেয়েছিলেন।মিষ্টিমুখে জামাই ঠকানো।জমিদার বাড়ির মহিলামহলে হাসির ফোয়ারা ছুটলো।দিকে দিকে এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লো।বাংলার মিষ্টি জগতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল জলভরা তালশাস সন্দেশ।

Jalbhara Surjya Kumar Modak-Jamai Sasthi Special-Origin-History-Bengal Special Sweets

এই জলভরা সন্দেশ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ এরও খুবই প্রিয় ছিল।চন্দননগরের পাতাল বাড়ির ঘাটে বজরা পৌঁছানো মাত্রই সূর্য মোদকের দোকানে মিষ্টির তলব পৌঁছে যেত।আর শীঘ্রই মিষ্টি হাতে পরমযত্নে হাজির হতেন সূর্য মোদক  কবিকে নিজের হাতে মিষ্টি খাওয়াতে।একবার ওনার হাতের মতিচুর খেয়ে তিনি অভিভূত হয়ে যান ও উনিই এই মিষ্টির নামকরণ করেছিলেন মতিচুর।এই দোকানের সব মিষ্টিই অপূর্ব তবে তালশাস, মতিচুকে বাদ দিলে ক্ষীরপুলি,অমৃত পাতুরী,রাবড়ি,ছানার পায়েস শ্রেষ্ঠত্বর দাবি করতেই পারে।

সূর্যমোদক শুধু মিষ্টান্ন বিক্রেতাই ছিলেন না,সাহিত্য ও কাব্যচর্চারও সখ ছিল বেশ।তাঁর লেখা পাঁচালী 'গীত গোবিন্দ' আজও চন্দন নগরের ফরাসী মিউজিয়ামে রাখা আছে।

'চন্দননগর ও তৎসংলগ্ন এলাকার লোকের কাছে জামাইষষ্ঠী ও বিশেষ দিন এই দোকানের মিষ্টি ছাড়া চলবেই না।বর্তমানে চন্দন নগরের মধ্যে অনলাইন ডেলিভারি করেন ওনারা।এছাড়া বিভিন্ন মিষ্টি উৎসবে অংশগ্রহণ করেন এনারা।বিদেশেও পাড়ি দেয় এই মিষ্টির সম্ভার।বর্তমানে সূর্য মোদকের সুযোগ্য উত্তরাধিকারী শৈবাল মোদক তাদের পারিবারিক ব্যাবসাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন সসম্মানে।বিখ্যাত সূর্য মোদকের জলভরা সন্দেশের এই ছিল জন্ম বৃত্তান্ত।যাত্রা শুরু হলো জলভরার।এখন যদিও হরেক রকম জিনিস ভরা তালশাস পাওয়া যায়,গোলাপ জল তো ছিলই,শীতকালে নলেন গুড়,স্ট্রবেরী, ক্যাডবেরি,গরম কালে আমের জলভরাও পাওয়া যায়।তাইতো বলে,"চন্দননগরের জলভরা,জামাই ঠকিয়ে আজও সেরা"

Address : 

247,G.T.Road(East),Barasat
Chandannagar
Hooghly-712136
West Bengal (India)

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

If you have any query, please let me know.

Popular Posts

Sonajhuri Haat-Khoai Mela-Baul Gaan-Santiniketan

Rani Rashmoni Ghat Halisahar | Fuchka Gram | Dayouting Near Ganges | Weekend Tours Near Kolkata

Top 10 Rajbari near Kolkata-Zamindar Houses in Bengal-Heritage Home Stay-Dayout Plan-Weekend Tour

Chatu Babu Latu Babur Bari - Bonedi Barir Durga Puja