Humayun's Tomb-Bega Begum-UNESCO World Heritage Site-Places to visit in Delhi
তাজমহলকে যদি আমরা ভালোবাসার নিদর্শন বলে আখ্যা দি,তবে হুমায়ুনের এই সমাধিটি কিন্তু সেই আখ্যা পেতে পারে অনায়াসেই।সব ভালোবাসা যদিও সমান ভাবে প্রচারের আলোয় আসে না। হুমায়ুন পত্নী স্বামীর মৃত্যুর পরে তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই সমাধি তৈরি করিয়েছিলেন দিল্লিতেই, স্বামীকে ইতিহাসের পাতায় অমর করে রাখার ইচ্ছায়। তিনি দেখে না যেতে পারলেও তার সে ইচ্ছা পূর্ণ হয়েছিল,বর্তমানে এটি UNESCO WORLD Heritage Site বলে পরিগণিত।২৪.০৪ হেক্টর জমি নিয়ে তৈরী, যা শুধু দেশের মধ্যে না সারা বিশ্বের এটি অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থল।ইতিহাসের সন ও তারিখ বলে মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার পত্নীর প্রতি ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ তাজমহল গড়েছিলেন ঠিকই কিন্তু সেটা তৈরির মূল ধারনায় ছিল হুমায়ুন টোম্ব,যা প্রায় ৬০ বছর আগে তৈরি।
দ্বিতীয় মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর ৯ বছর পর ১৫৬৫ সালে তার স্ত্রী বেগা বেগম (পরবর্তীতে হাজী বেগম) মনস্থির করেন তিনি সমাধি সৌধ বানাবেন ও সেই অনুযায়ী ১৫৭০ সালে তৈরি হলো দিল্লিতেই চারবাগ (চারটে বাগান) সমন্বিত হুমায়ুনের সমাধিস্থল। পার্সী স্থপতি মিরক মীর্জা ও তার পুত্র সাইদ মহম্মদ দ্বারা সৃষ্টি এই সমাধি ভারতীয় উপমহাদেশের 'প্রথম বাগান পরিবেষ্টিত সমাধি'।ভারতে প্রথম এখানেই স্যান্ডস্টোন এত বৃহৎমাত্রায় ব্যবহৃত হয়েছে।দ্বিতল,অত্যুচ্চ, অষ্টভূজাকৃতি আকৃতির এই সমাধি বিশালত্ব, সৌন্দর্য্য বা নতুনত্ব সব মিলিয়ে ১৯৯৩ সাল থেকে UNESCO WORLD Heritage Site বলে পরিগণিত।
বেগা বেগম জন্মসূত্রে (জন্ম ১৫১১)পারস্য দেশীয়।বিবাহের পর তিনি বৈবাহিক সূত্রে আসেন ভারতে।অতি ছোট বয়সে ১৯ বছরের নাসিরউদ্দিন মহম্মদ ওরফে হুমায়ুন এর সাথে তার বিয়ে হয়। ইনিই ছিলেন দ্বিতীয় মুঘল সম্রাট এর প্রথমা স্ত্রী।সারা জীবন ধরেই প্রচুর দান ধ্যান করেন।কষ্টও পেয়েছেন প্রচুর।একটি পুত্র ও কন্যা সন্তান জন্ম দিলেও তারা দুজনেই বেশিদিন বাঁচেনি।প্রথম দফায় তিনি ১৫৩০-১৫৪০ হিসাবে, ও দ্বিতীয় দফায় ১৫৫৫-১৫৫৬ পর্যন্ত ছিলেন দিল্লির মসনদের প্রধান বেগম হিসাবে। মক্কা থেকে হজ সেরে ফেরার পরই তিনি হাজী বেগম বলে নতুন ভাবে পরিচিত হন এবং মক্কা থেকেই তিনি মনস্থির করেছিলেন যে তিনি সমাধিসৌধ তৈরি করবেন,যে জন্য তিনি সাথে করেই এনেছিলেন মক্কার বেশ কিছু নামজাদা স্থপতি।পরবর্তীতে দিল্লিতে স্থানীয় ও পার্সী স্থপতি মিলে মিরক মির্জার তত্ত্বাবধানে গড়ে তোলেন নজর কাড়া এই স্থাপত্য।জীবনের শেষ বয়স বেগা বেগম কাটান ধর্ম নিয়ে।৫০০ জন দরিদ্র মানুষের ভরণ পোষণের ভার নিয়েছিলেন তিনি।পরবর্তীতে আকবর আগ্রা চলে গেলেও তিনি থেকে যান দিল্লিতেই।স্বামী স্মৃতি আগলে হুমায়ুন টোম্বের কাছেই প্যালেসে তিনি নিজের শেষ জীবন কাটান।
মৃত্যুর (১৭ই জানুয়ারি,১৫৮২) পর স্বামীরই কাছাকাছি চারবাগেই সমাধিস্থ হন।পরবর্তীতে এই বাগানেই মুঘল পরিবারের প্রায় ১৫০ জনকে সমাধিস্থ করা হয়।তাই এই স্থানকে বলা হয় "Dormitory of the Mughols"।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
If you have any query, please let me know.