Tetultala Jagadhatri Puja-Gourhati-Bhadreswar-Chandannagar


Tetultala Jagadhatri Puja-Gourhati-Bhadreswar-Chandannagar Jagadhatri Puja

চন্দননগর বলতেই প্রথমেই মনে আসে জগদ্ধাত্রী পুজো ও জলভরা সন্দেশের কথা।পুজোর আলোকসজ্জা, 
লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়,তারই মাঝখান দিয়ে অতি উচুঁ মায়ের বিসর্জনের শোভাযাত্রা,পুজোর ডাকের সাজের কথা আজ বিশ্বজোড়া, যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আলোকময় শোভাযাত্রা, Rio de Janeiro এর পর।

চ্ন্দননগর ,ভদ্রেশ্বর ও মানকুন্ডুর মধ্যে সেরার সেরা জগদ্ধাত্রী পুজোগুলো রইলো নিচের ভিডিও লিংকে -
 


বিসর্জনের আগে মাকে বরণ করে বিদায় জানানোর রীতি সব ক্ষেত্রেই। বিদায়বেলায় মেয়ে-বউরা নয়, পুরুষেরা শাড়ি, শাঁখা, সিঁদুর পরে মাকে বরণ করেন।আজ বলবো সেই অভিনব পুজোর কথা।আগে বলেছি পুজোর প্রবর্তন, ছড়িয়ে পড়ার ইতিহাস, নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ,ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর নানান কথা।


সেই অভিনব পুজোটি ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলার গৌড়হাটির।যেখানে পুজো শুরু থেকেই চলে আসছে এই রীতি।পুজোর কাজে মেয়েরা ব্রাত্য।


শ্রীরামপুরের জমিদার গোস্বামীরা পুজোর জন্য জমি দেন ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলা গঙ্গার ঘাটে।সেইখানে শুরু হয় পুজো সেই থেকে চলছে আজ অবধি। নিজস্ব মন্দিরও আছে সেইখানে।পুজোও হয় রীতিমতো নিষ্ঠা ও আড়ম্বরের সাথে।অপূর্ব শোভা মায়ের রুপে,দেহ সুদীর্ঘ,গায়ের রং প্রভাত সূর্যের মতো উজ্জ্বল।১০০ টি বেনারসি লাগে মায়ের বস্ত্র তৈরি করতে,যা বলার অপেক্ষা রাখে না,এটাই মায়ের বিশেষত্ব।
বরণের কেনো এই অদ্ভুত রীতি তার লিখিত প্রমাণ না থাকলেও লোকশ্রুত,আগে এই পুজো দেখতে আসত ফরাসীরা ও পরে ইংরেজরাও।তাদের সামনে বাড়ির মেয়ে বউদের বেরোনোয় ছিল নিষেধাজ্ঞা,কিন্তু পুজো তো করতেই হবে।ভার তুলে নিয়েছিল পুরুষেরা।তাই আজও এই রীতিকেই মেনে,বয়ে নিয়ে চলেছে ক্লাবের সদস্যরা।তারা সবাই নিজেদের ব্যাক্তিগত জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত কিন্তু বরণের সময় শাড়ি, হাতে বালা, শাঁখা,সিঁদুর পরে নিজেদের তৈরি করতে দ্বিধা করেন না।এ কাজকে তারা পরম্পরা বলে মনে করেন।পুজোমণ্ডপের পিছনেই থাকে তাদের মেকআপ রুম যাকে আমরা বলে থাকি গ্রীনরুম।


রীতি সে যাই হোক  তাকে বহন করে নিয়ে চলাই আসল। মায়ের কাজে অগ্রাধিকার সবার, সে পুরুষ হোক বা মহিলা।সেটাই হয়তো বার্তা এই তেঁতুলতলার।
নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র চাইতেন জগদ্ধাত্রী পুজোকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে।সে সুবাদে কৃষ্ণনগরের বেশ কিছু পুজোর শুরুও হয়েছিল।কৃষ্ণচন্দ্র নিজের নায়েব,গোমস্তা, কোষাধ্যক্ষ সবাইকে অনুদান দিয়েছিলেন নিজের নিজের এলাকায় পুজো শুরু করার জন্য।তার বিশ্বস্ত কর্মচারীদের অন্যতম ছিলেন দাতারাম সুর।তিনি আনুমানিক ১৭৬৩ খিস্টাব্দ বা তার কিছু পর চন্দননগরের গৌরহাটিতে নিজের বাড়িতে দুই বিধবা মেয়েকে নিয়ে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন।
গৌড়হাটি চন্দননগর এলাকায় হওয়ায় কেউ কেউ এই পুজোকেই চন্দননগরের প্রথম পুজো মানতে চান।৩০ বছর এভাবে পুজো চলার পর দাতারাম সুরের অবর্তমানে এই পুজো বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।তখন স্থানীয় বাসিন্দারা সেই পুজো তুলে আনেন বিশালাক্ষী তলায়।সেখানেও কিছু অসুবিধা দেখা যায়।তখন শ্রীরামপুরের জমিদার গোস্বামীরা তেঁতুলতলায় গঙ্গার ঘাটে জমি দিলে সেখানেই শুরু হয় পুজো,যা আজও চলছে তেঁতুলতলার গৌড়হাটির পুজো বলে।পুজো রীতিমতো ঘটাকরেই হয়। আর বরণের অভিনব ঘটনার সাক্ষী হতে হাজির হন নানান প্রান্তের মানুষ।ক্যামেরাবন্দি করেন সেই মুহূর্তকে।টিভি চ্যানেল থেকে শুরু করে,খবরের কাগজসহ নানান মানুষ ছুটে আসেন।

মন্তব্যসমূহ

Popular Posts

চকদীঘি বাগানবাটি | Chakdighi Baganbati | Chakdighi Rajbari | Day Tour | Shooting Locations

10 Famous Rath Yatra in West Bengal-পশ্চিমবঙ্গের ১০টি বিখ্যাত রথযাত্রা

Rani Rashmoni Ghat Halisahar | Fuchka Gram | Dayouting Near Ganges | Weekend Tours Near Kolkata

Gobardanga Jamidar Bari-Prasannamoyee Kali Mandir-Gobardanga Kalibari